পোস্টগুলি

2017 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বাংলায় কি আর ঈ-কার নেই???

ছবি
'সহকারি' শব্দটির সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ২০১২ সালের শেষ দিকে। জনাব জাহিদুল ইসলাম আমাকে একটা ভিজিটিং কার্ড দেন যাতে লেখা ছিল "সহকারি শিক্ষক, বাংলা"। 'সহকারি' শব্দটি দেখে বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। বাংলার শিক্ষক তো বাংলায় ভুল করার কথা না! ভেবেছিলাম- কি জানি হয়তো বাংলা বানান থেকে ঈ-কার উঠে গেছে। তবে কি 'জীবন' হয়ে গেছে 'জিবন'? 'নদী' হয়ে গেছে 'নদি'? 'বীর' হয়ে গেছে 'বির'? ইদানীং দেখছি বিজ্ঞ কলেজ শিক্ষকবৃন্দও জেনে-বুঝে 'সহকারি অধ্যাপক' লিখছেন। 'সহযোগি অধ্যাপক' লিখতেও কাউকে কাউকে কদাচিৎ দেখা যায়। তবে কি 'সরকারি' বানানের মতো সব বানানেই ই-কার চালু হয়ে গেছে? একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি তো বলেই ফেললেন,  " শুনেন, 'শাড়ী' যদি 'শাড়ি' হয়, 'গাড়ী' যদি 'গাড়ি' হয়, 'বাড়ী' যদি 'বাড়ি' হয়, 'হাতী' যদি 'হাতি' হয়, 'পাখী' যদি 'পাখি' হয়, 'ইংরেজী' যদি 'ইংরেজি' হয়, 'সরকারী' যদি 'সরকারি' হয়- তবে 'সহকারি', 

বাংলা বানানে ও-কার নিয়ে যত গণ্ডগোল ও বিভ্রান্তি!

ছবি
বাংলা বানানকে সহজ ও সাবলীল করতে বাংলা একাডেমী (যদিও 'একাডেমী' বানান নিয়েই রয়েছে শত বিভ্রান্তি!) "প্রমিত বাংলা বানানরীতি" প্রণয়ন করার পর থেকে বাংলা বানান শুদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে ভুলের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থের বিভ্রান্তি দূর করার জন্য বাংলা একাডেমী নতুন বানানরীতিতে অনেকক্ষেত্রে ও-কার সংযোজন করেছে। কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি:- ছবিটি প্রতীকী (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত) গেল = যাওয়া ( went) যেমন:- ছেলেটি কোথায় গেল? গেলো = গলাধঃকরণ করা (swallowing) যেমন:- ভালো না লাগলেও ওষুধ গেলো। কেন = why যেমন:- বাংলা এত কঠিন কেন? কেনো = ক্রয় করো (buy) যেমন:- আমার জন্য বইটি কেনো? কর = হাত (hand) যেমন:- করজোড়ে ক্ষমা চাই। করো = do যেমন:- আমাকে ক্ষমা করো। হত = আহত (injured) যেমন:- হত হৃদয়ে সে বলল, " আমি ভালো নেই।" হতো = হওয়া যেমন:- বাংলা সহজ হলে ভালো হতো। মত = মতামত (opinion) যেমন:- এই বিয়েতে আমার মত নেই। মতো = সদৃশ যেমন:- তুমি দেখতে তোমার মায়ের মতো। ভাল = কপাল যেমন:- এই ছিল মোর ভালে? ভালো = good যেমন:- এটা তো খুব ভালো। হল = hall যেমন:- সে

প্রাইভেট ব্যাচ নাকি জেনারেল ক্লাস? সমাধান কোন পথে?

ছবি
সেদিন ছিল জুলাই মাসের এক তারিখ। ক্লাসে ঢুকেই থতমত খেলো রতন। কানায় কানায় ভরে গেছে মাঝারি সাইজের ক্লাসরুমটি। কিছু শিক্ষার্থী বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে জায়গা নেই আর। মাইক্রোফোন হাতে শিক্ষকটিকে ভীষণ অসহায় দেখাচ্ছে। মাঝে মাঝে অসহায় শিক্ষকটি হাতে থাকা ডাস্টার দিয়ে টেবিলে আঘাত করছেন। মুহূর্তের নীরবতা। তারপর আবার গুঞ্জন, কোলাহল, চেচামেচি। সর্বোচ্চ পাঁচজন বসা যাবে এমন একটা বেঞ্চে রতনরা বসেছে সাতজন। সে-কি চাপাচাপি! রতন দেখতে পেল, তিন বেঞ্চ সামনের ছাত্রছাত্রীরা আরামে ফেসবুক চালাচ্ছে। একদম পেছনের ডান কোনায় চারজন ছাত্র গোল হয়ে আড্ডা মারছে। রতনের পাশের জন ঝিমোচ্ছে, ঘুমোবে বোধহয়। অসহায় শিক্ষক যার পরিচয় এখনো জানে না রতন, তিনি ভাষণ দিয়েই যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে যাচ্ছেন টেবিলটাকে। বাড়ি ফেরার পরেও ক্লাসের গুনগুন ধ্বনি কানে বাজতে থাকলো রতনের। পরেরদিন একই চিত্র। তারপরের দিনও তাই। ইদানীং তাই রতন ক্লাসের বাইরেই ঘোরাফেরা করে। ভেতরে ঢোকার সাহস পায় না সে। এত শব্দ দূষণ! সেদিন বাংলা ক্লাস চলছিল। রতন ক্লাসের বাইরে নতুন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারছিল। ওদেরকে দেখে ডেকে

বুলবাল ভাংলা (ভুলভাল বাংলা)

ছবি
সেই ২০০৪ সালের কথা। আমার ছাত্র ছিল হামিদুল। মাঝে মাঝে কথার ছলে বলতো,  "স্যার, আমার খালি বান্নাম ভূল হয়।"  আমার হাসি পেত। বলতাম, 'বান্নাম' নয়, হবে- 'বানান'। আর 'ভূল' হবে না। হবে- 'ভুল'। হেসে উত্তর দিত সে, "দেখলেন তো ভুলের বানানও ভুল।" ভুলভাল বাংলার একটি বাস্তব চিত্র ইদানীং ফেসবুকের দিকে তাকালে বড্ড হতাশ হই। বাংলা বানানের শুদ্ধতার দিকে কারও এতটুকু নজর নেই।   সেদিন ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেখলাম- "অদবুত ওঠের পিটে চলেসে স্বদ্বেষ" দয়াকরে ভাববেন না, আপনাদেরকে সস্তা বিনোদন দিতে এসব কথা মেগাবাইট খরচ করে লিখছি। আপনিও একটু চারপাশে তাকিয়ে দেখুন, চোখে পড়বে। আমাকে এক ছাত্র সেদিন একটা মেসেজ দিলো। ছাত্রটির ফেসবুক নাম 'আমি সুদু তুমার' । ছাত্রটি লিখেছে- "সার, আপনের লেকা পরে বেপুক বিনুদুন পাই।" মেসেজটি পড়ে একাই হাসতে থাকি। রিপ্লাইয়ে লিখে দেই- "কপাল ভালো যে আমাকে 'সার' বলেছো, 'ষাঁড়' বলো নাই। বাংলা বানানের নিয়ম কানুন মানছে না কেউই।  সবাই যেন ধরেই নিয়েছ